বছরের বাকি ১১ মাস শুকনা ফলের রাজত্ব, আর ঠিক সেই সময়েই লুকিয়ে থাকে এক গোপন সুপারস্টার। নাম তার কাঁচা খেজুর। সারা বছর বাজারে দেখা মেলে না, এসে হাজির হয় শুধু মাত্র ৩০ দিনের জন্য। আর সেই অল্প সময়েই জমিয়ে দেয় বাজার ও শরীর—দুটোই।
পুষ্টিবিদ থেকে আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ—সবাই একবাক্যে বলছেন, খেজুর এমন এক ফল যা শক্তি বাড়ায়, রক্ত বাড়ায়, আবার বাড়তি খুঁতখুঁতেও কমিয়ে দেয়। দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে তো কথাই নেই—ইমিউন সিস্টেম হয়ে যায় পাহারাদার।
কাঁচা খেজুরে আছে ভিটামিন, প্রোটিন, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট এবং প্রাকৃতিক চিনি। এই কারণেই অনেকে একে বলে থাকেন সুপার ফুড। বিশেষ করে উপবাস ভাঙতে খেজুরের জনপ্রিয়তা আকাশছোঁয়া। প্রথম কামড়েই শরীরে পৌঁছে যায় শক্তির টুনটুনে সিগন্যাল।
রক্তশূন্যতা দূর করতে আয়রন আছে ভরপুর, আর ক্যালসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও কপার হাড়কে করে দেয় লোহার মতো শক্ত। নিয়মিত সেবনে নাকি চুলের পাতনও কমে—এ তথ্য শুনে অনেকেই খেজুরের দিকে তাকাচ্ছেন একেবারে প্রেমিকের দৃষ্টিতে।
হার্টের স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও কাঁচা খেজুর অদ্বিতীয়। ব্যাড কোলেস্টেরলকে কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরলের দিকে শরীরকে ঠেলে দেয়। কার্ডিওলজিস্টরা তাই পরামর্শ দেন, প্রতিদিন সকালে বা সন্ধ্যায় ৩-৪টি খেজুর খেয়ে নিলে হৃদয় থাকে ঝকঝকে।
হজমের ঝামেলা? সমস্যা নেই। এই এক ফলেই আছে দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় উভয় ধরনের ফাইবার, যা পরিপাকতন্ত্রকে করে আরও দক্ষ। যাদের হজমশক্তি একটু নড়বড়ে, তারা খেজুর খেয়েই উপকার টের পাবেন।
সব মিলিয়ে কাঁচা খেজুর যেন পুষ্টির প্যাকেট। কিন্তু শর্ত একটাই—একে ধরতে হবে ঠিক সময়ে। কারণ বছরজুড়ে খোঁজ করলেও পাবেন না, যে মাসে আসে, সে মাসেই কিনে খেতে হবে।
যারা এখনও ট্রলিতে খেজুর তোলেননি, তারা হয়তো বছরের সবচেয়ে সুস্বাদু সুযোগটা হারিয়ে ফেলছেন।
