লিভার—এই এক অঙ্গ, সারা শরীরের ‘ক্লিনিং স্টাফ’। দিনরাত খেটে আমাদের শরীর থেকে বিষাক্ত জিনিস বাছাই করে। কিন্তু আমরা? তাকে ঠিকমতো খাবার দেই না, উল্টো ঠেলাঠেলি করি জাঙ্ক ফুড, অ্যালকোহল, ধূমপান আর অলস জীবন দিয়ে!
ফলাফল?
লিভার রাগে ফুলে ফেঁপে একসময় বলে—“আমি গেলাম!”
আর তখনই মাথায় আসে এর ভয়ংকর নাম—লিভার ক্যানসার।
কিন্তু ভয় নেই! একটু সচেতন হলেই এই নীরব আততায়ীকে হারানো যায়। ভারতের লিভার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ডা. বসন্ত মহাদেবাপ্পার মতে—জীবনযাপনে কয়েকটা ছোট পরিবর্তন এনে লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো যায়।
তাই চল, আজ থেকে লিভারের বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে যাই!
লিভার ক্যানসার প্রতিরোধে ৬টি সুপার টিপস
১) হেপাটাইটিস বি-এর টিকা নাও—ফ্রি জিনিস মিস করো নাকি!
বাংলাদেশে হেপাটাইটিস বি টিকা বিনামূল্যে পাওয়া যায়।
এটি লিভার ক্যানসারের প্রধান শত্রু।
আর হেপাটাইটিস বি ও সি থেকে বাঁচতে
– পরিষ্কার সূঁচ
– নিরাপদ রক্ত
– সুরক্ষিত যৌন আচরণ
এই তিনটি নিয়ম মানতেই হবে।
২) অ্যালকোহল ছাড়ো—লেবু পানি ধরো
অ্যালকোহল লিভারের জন্য এক নম্বর ভিলেন।
নিয়মিত নিলে লিভার একসময় “রিজাইন লেটার” দিয়ে বসে।
তাই নারকেল পানি, লেবু পানি—এইগুলোই হোক তোমার পার্টনার!
৩) ওজন কমাও—লিভারকে হালকা নিশ্বাস নিতে দাও
স্থূলতা = ফ্যাটি লিভার = ক্যানসারের পথ
তাই
– ওটস
– ফল
– শাকসবজি
– নিয়মিত হাঁটা বা যোগব্যায়াম
এগুলো লিস্টে থাকতেই হবে।
৪) আফ্লাটক্সিন দূরে রাখো—ফাঙ্গাসের সাথে বন্ধুত্ব না
ভুট্টা, বাদাম, ডালে যদি ছত্রাক থাকে → সরাসরি লিভারের ক্ষতি
গন্ধ লাগলে ব্যস, বিন্দু মাত্র দয়া নয়! সরাসরি ডাস্টবিনে।
৫) ধূমপানকে সি-অফ বলো
ধূমপান শুধু ফুসফুস নয়, লিভারেরও শত্রু।
তাই টানাটানি বন্ধ করো, জীবনটা বাঁচাও।
৬) বছরে অন্তত একবার লিভার চেকআপ
বিশেষ করে যদি
– হেপাটাইটিস থাকে
– বেশি মদ্যপান করো
– বা ফ্যাটি লিভার থাকে
তাহলে নিয়মিত লিভার ফাংশন টেস্ট + আলট্রাসোনোগ্রাফি জরুরি।
লিভার ভালো রাখতে দৈনন্দিন অভ্যাস
– প্রচুর পানি পান
– তুলসি বা হার্বাল চা
– প্রতিদিন ৭ ঘণ্টা ঘুম
– মেডিটেশন/স্ট্রেস কমানো
– ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি
এই ছোট রুটিনগুলো লিভারের VIP কেয়ার
শেষ কথা: লিভার ক্যানসার একদিনে আসে না
ধীরে ধীরে শরীরের ওপর চাপের ফলে জন্ম নেয়।
তাই আজ থেকেই সিদ্ধান্ত নাও—
সুস্থ খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, টিকা, আর নিয়মিত পরীক্ষা—
লিভার থাকবে খুশি, তুমি থাকবে বস!