দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে এক ক্লিকে মানুষের আবেগ প্রকাশের মহাবীর ছিল যে লাইক বাটন, সেটির এখন নাকি বয়স হয়েছে। ২০০৯ সালে জন্ম নেওয়া এই নরম-সরম বাটনটি ছিল এমন এক ডিজিটাল তারকা, যেটা দিয়ে কেউ কাউকে ভালোবাসা না জানিয়ে শুধু ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে দিত, হুম, তুমি ঠিক আছো। কিন্তু এখন সেই তারকাখ্যাতি ধীরে ধীরে ফিকে হচ্ছে ওয়েবে।
মেটা ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে বাইরের ওয়েবসাইটগুলোতে আর কাজ করবে না লাইক ও কমেন্ট বাটন। ব্লগ, নিউজ পোর্টাল, ই-কমার্স—সবখানেই লাইক বাটনের চাকরি শেষ। অর্থাৎ আপনি আর কোনো নিউজ পড়তে গিয়ে লাইক চাপ দিয়ে বলতে পারবেন না, “ভাই, নিউজটা মন্দ না!”
তবে ভয় নেই। ফেসবুকের নিজস্ব অ্যাপ আর ওয়েবসাইটে লাইক বাটন আগের মতোই থাকবে। সেখানে লাইক চাপতে থাকুন, অ্যালগরিদমকে তুষ্ট রাখুন।
এবার প্রশ্ন হলো, কেন এই মহা সিদ্ধান্ত?
মেটার যুক্তি বেশ নাটকীয়। তারা বলছে—ওসব ওয়েব প্লাগইন খুবই পুরনো, প্রায় জাদুঘরে তোলার মতো অবস্থা। গোপনীয়তা আইন, ডেটা শেয়ারিং ঝামেলা, আর নতুন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের দাপটে এসব টুল আর মানুষ ব্যবহারই করে না। বাটন তো আছে, কিন্তু সবাই ব্যস্ত অন্য অ্যাপে, স্ক্রল করে জীবন কাটাচ্ছে।
ফেসবুকের ওয়েব দখলের স্বপ্ন এখন অনেকটাই শুকিয়ে গেছেন খিরের মতো। তাই তারা বলছে, অতীত টেনে এনে লাভ কী? চল নতুন কিছু করি।
তবে ভুলবেন না: লাইক বাটন শুধু টেকনোলজি নয়, সংস্কৃতি। কে কত লাইক পেল, সেটা দিয়েই ঠিক হতো কার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী আর কারটা তলানিতে। একসময় লাইক ছিল সোশ্যাল মিডিয়ার মুদ্রা, এখন সেটা হয়ে গেছে নস্টালজিয়ার গল্প।
২০২৫ সালের ইন্টারনেট বদলে গেছে। সবাই এখানে-ব সেখানে—হাজার অ্যাপে সময় কাটাচ্ছে। অ্যালগরিদম এখন মহাজ্ঞানী, আর গোপনীয়তা রাজনীতির নতুন খেলা। তাই মেটা বলছে: পুরাতন বিদায়, উদ্ভাবন এগিয়ে আসুক।
শেষ কথা: লাইক বাটন এখনও বেঁচে আছে, তবে আগের মতো সেলেব নয়। এখন সে শুধু নিজের ঘরেই থাকবে—ফেসবুকে। বাইরে তার আর তেমন দাপট নেই। যেন বলা যায়—তারকা থেকে এখন সে ঘরোয়া শিল্পী।
.png)